প্রবাদে আছে, ‘বুদ্ধি যার বল তার’। বুদ্ধিমান হতে গেলে দরকার মস্তিষ্কের পুষ্টি আর সেই পুষ্টি আসে হেলথ ড্রিংক থেকে নয়, পুষ্টিকর খাবার থেকে। প্রতিদিন হাজার চিন্তার সঠিক কাজটা করতে হয় মস্তিষ্ককে। তাই তার জন্য চাই প্রকৃত খাবার। কীভাবে আপনি আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ ও সক্রিয় রাখবেন- এখানে থাকছে তেমনি কিছু খাবারের তালিকা।
তৈলাক্ত মাছ : তৈলাক্ত মাছ খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের মাছ মস্তিষ্কের জন্য বিশেষ উপকারী। যে সব মাছে তেল বেশি থাকে, তেমন কিছু বড় মাছ নিয়মিত খেলে বুদ্ধি বাড়বে তড়তড়িয়ে।
সামুদ্রিক মাছ: মানুষের মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশ চর্বি দিয়ে তৈরি। তাই এটিকে সক্রিয় রাখতে প্রয়োজন ফ্যাটি অ্যাসিড। সামুদ্রিক মাছ যেমন- স্যামন, টুনা ও অন্য সামুদ্রিক মাছ মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে বেশ উপকারী। কারণ এই খাবারগুলোতে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আলজইমার রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ব্লু বেরি: রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে ব্লুবেরির সেরা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিবিদদের মতে, ব্লুবেরিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। যা মস্তিষ্ক সচল রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি: গবেষকরা বলছেন, গ্রিন টি মস্তিষ্কের সংযোগ ক্ষমতা বাড়ায়, সেই সাথে পারকিনসন্স ও স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে রক্ষা করে। চিনি ছাড়া দিনে তিন কাপ সবুজ চা আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভীষণ উপকারী।
ওটস: ওটসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। এটি পেটের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়াতে পারে এই ওট্স। তাই বাচ্চা-বুড়ো সবারই প্রতিদিন ওটস খাওয়া উচিত। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। ওটস খেতে ভালো না লাগলে ওটসের কুকিজ, কেক, বিস্কুট খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে, যা মস্তিষ্কের সংযোগ শক্তি বৃদ্ধি করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে, আছে ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ই ও ভিটামিন কে, যা ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে।
বাদাম এবং বীজ: বাদাম এবং বীজ ভিটামিন E-এর ভালো উৎস। সঠিক মাত্রার ভিটামিন ই আমাদের মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তাই রোজকার ডায়েটে শুকনো ফল যেমন— আখরোট, কাজু, পেস্তা, চিনা বাদাম এবং কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, তিল বীজ রাখতে পারেন।
আখরোট: আখরোটে অন্যান্য বাদামের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটি মস্তিষ্ককে যেকোনো রোগ থেকে রক্ষা করে।
টমেটো: সহজলভ্য এই সবজিটি মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, কারণ এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচায়।
ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেটে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকে এবং ক্যাফিন-সহ প্রচুর প্রাকৃতিক উদ্দীপক থাকে। যা মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে এবং সেই সঙ্গে এন্ডোরফিনের উৎপাদনকেও উদ্দীপিত করে। এর ফলে মেজাজ ভালো থাকে। তাই সাধারণ চকোলেটের বদলে শিশুকে ডার্ক চকোলেট খাওয়াতে পারেন।