জীবনধারা

ঈদে ঘর সাজাবেন যেভাবে

মোহনা অনলাইন

আর এক-দুইদিন পরই ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদের সময় বাড়িতে আসবেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব। এ সময় আপনার বাড়িটিকেও দিন উৎসবের আমেজ। যেহেতু ঘরেই ঈদের দিনটি কাটাতে হবে, তাই এখন ঘরের রূপ পাল্টে ফেললে মন্দ হয় না।

এখন যেহেতু গরমকাল, তাই চাইলে ঘরে সামার লুক দিতে পারেন। ঘরের যেদিকেই তাকাবেন, সেদিকেই যেন প্রশান্তি মেলে-ঠিক এমনভাবেই সাজাতে হবে ঘরটি। জেনে নিন ঈদে ঘর সাজাবেন যেভাবে-

আকর্ষণীয় রং: ঈদ মানেই উৎসব ও আনন্দ। তাই ঘরের সাজসজ্জায় আকর্ষণীয় রং বেছে নিন। এতে তাৎক্ষণিকভাবে আপনার ঘরের পরিবেশ বদলে যাবে। গাঢ় লাল, সোনালি, হলুদ, সবুজ অথবা রাজকীয় নীলের মতো সমৃদ্ধ রংগুলো নির্বাচন করুন। একটি আকর্ষণীয় এবং উৎসবের পরিবেশ তৈরি করতে ফ্যাব্রিকস, কুশন এবং টেবিল ম্যাটে এই রংগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। দেয়ালের রং অনুযায়ী এসবের রং নির্বাচন করুন।

আসবাব: ঈদের সময় ঘরের জন্য চাইলে নতুন আসবাব কেনা যায় আবার পুরোনো আসবাবকে নতুন রূপ দেওয়া যায়। পেইন্ট করে আসবাবে নতুন ভাব আনা যায়। এ ছাড়া ঘরে নতুনত্ব আনতে আসবাবের জায়গা পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে ঘরে নতুন নতুন ভাব আসবে।

মেইন গেটের সজ্জা: আপনার প্রবেশদ্বার দিয়ে রুচিবোধের একটি শক্তিশালী ছাপ তৈরি করুন। সামনের দরজায় কৃত্রিম ফুল, পাতা এবং ফিতা দিয়ে সজ্জিত সুন্দর ফুল লম্বালম্বি করে দেয়ালে সাথে ঝুলিয়ে রাখুন। প্রবেশদ্বারের কাছে একটি ছোট টেবিলে ফুলদানি ও তাজা ফুল কিংবা সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি বা খেজুরের একটি বাটি দিয়ে সাজান। দরজার পাশের দেয়ালে একটা আয়না ঝুলিয়ে দিন।

ঘরে গাছ: যেহেতু এখন গরম, তাই ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে ইনডোর গাছ রাখতে পারেন। এতে পুরো ঘরের সৌন্দর্যই পাল্টে যাবে। ইনডোর প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে অ্যালোভেরা, মানি প্ল্যান্ট, লাকি ব্যাম্বু, লিলি কিনে আনুন ও ঘরের বিভিন্ন কোণায় সেগুলো সাজিয়ে রাখুন। এতে ঘরে যেমন সবুজ পরিবেশ পাবেন, ঠিক তেমনি চোখও জুড়াবে সবুজের ছোঁয়ায়।

আলোকসজ্জা: আপনার বাড়ি জুড়ে বিভিন্ন ধরনের আলোর ব্যবস্থা করুন। উষ্ণ আভা তৈরি করতে জানালা, দেয়াল বা দরজার পাশে স্ট্রিং লাইট ঝুলিয়ে রাখুন। আরামদায়ক অনুভূতি পেতে মোমবাতি ব্যবহার করুন। নিরাপত্তার কারণে আসল মোমবাতি ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে ফ্লেমলেস এলইডি মোমবাতি বেছে নিন। ড্রইং রুমে মৃদু আলো ব্যবহার করুন। খাবার ঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখবেন।

বসার ঘর: বসার ঘরের এক পাশের দেয়াল পছন্দমতো রঙে রাঙিয়ে নিতে পারেন। নিজের পছন্দের উজ্জ্বল রং দিয়ে ছবিও আঁকতে পারেন। এ ছাড়া ওয়ালপেপারও ব্যবহার করতে পারেন। দেয়ালে নতুন নতুন ছবি লাগিয়েও বদল আনা যায়। কম খরচে ঘরে নতুনত্ব আনতে পর্দা ও কুশন কভার পাল্টে ফেলতে পারেন। বিভিন্ন বুটিক শপে ম্যাচিং পর্দা ও কুশন কভার পাওয়া যায়।

সোফার পরিবর্তে ছোট টুল বা জলচৌকি ব্যবহার করতে পারেন। বেতের তৈরি নানা নকশার টুল পাওয়া যায় আজকাল। এগুলো যেমন সৌন্দর্য বর্ধন করে, তেমনি এগুলোর জায়গা বদল করে সহজেই ঘরে আনা যায় নতুনত্ব। ঘরের একটা কোণে শতরঞ্জি পেতে তাতে কয়েক ধরনের কুশন দিয়ে খুব সহজেই একটি আরামদায়ক বসার জায়গা তৈরি করা সম্ভব। নানা আকার আর ধরনের শতরঞ্জি বাজারে পাওয়া যায়। শুধু মেঝেতে নয়, চেয়ারে কিংবা টেবিলেও হালকা ধরনের শতরঞ্জির ব্যবহার করা যায়।

খাবার ঘর: ঈদের দিন বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবাশীরা আসবেই। তাই ডাইনিং এরিয়াতে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমৃদ্ধ রং এবং মার্জিত টেবিলক্লথ, ন্যাপকিন এবং রানার ব্যবহার করুন। ফুল, মোমবাতি বা উভয়ের সংমিশ্রণ দিয়ে এগুলো সাজান। উৎসবের স্পর্শ আনতে থিমযুক্ত ডিনারওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। এলোমেলো করে ব্যবহার না করে সব পাত্র হাতের কাছে গুছিয়ে রাখুন।

টেবিল রানার ও ম্যাট: ঈদের দিনে খাবার টেবিলের সাজ পায় বিশেষ গুরুত্ব। মজার মজার খাবার সাজানো হবে যে টেবিলে, সেটারও সাজসজ্জা হওয়া চাই উৎসব উপযোগী। টেবিল সাজানোর অনুষঙ্গগুলোর মধ্যে টেবিল রানার ও ম্যাটকেই প্রাধান্য দিতে হবে। টেবিলে একটু উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের ম্যাট ও রানার সুন্দর লাগবে। টেবিল ক্লথ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাদা রঙের পরিবর্তে উষ্ণ রং বেছে নিতে পারেন।

কারুশিল্পের ব্যবহার: নিজেই কারুশিল্প তৈরি করে ঘর সাজিয়ে ফেলুন। এসব শিল্পে ঈদুল আজহার চেতনাকে প্রতিফলিত করুন। পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণগুলো দিয়ে নানা রকম জিনিস তৈরি করুন। এগুলোর মাঝে ইসলামি শুভেচ্ছা প্রদর্শন করুন।

এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করুন: আপনার বাড়িতে আনন্দদায়ক পরিবেশ আনতে সুগন্ধ দিয়ে ভরে ফেলুন। ল্যাভেন্ডার বা মৃদু সুবাসযুক্ত ফ্রেশনার ব্যবহার করুন। বাসায় কখনোই লেমন বা ফলের সুবাসযুক্ত কড়া ফ্রেশনার ব্যবহার করা উচিত নয়। যতটা সম্ভব গোলাপ, জুঁই বা চন্দনের মতো সুগন্দ বেছে নিন। এছাড়াও সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি বা প্রয়োজনীয় তেল ডিফিউজারগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button