আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নোতারা ঝিমিয়ে পড়েছে। কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। যারা আমাদেরকে চাপে রাখতে চেয়েছিল, তারাই এখন চাপে আছে। কারণ আরব বসন্তের ছোঁয়া আটলান্টিকের ওপারেও লেগেছে।
শুক্রবার (৩ মে) সকালে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আইনের ফাঁদে আটকা। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এ মামলায় তার সাজা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়াতে তিনি বাসায় আছেন। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ মামলা করেনি। বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করতেও ব্যর্থ হয়েছে।
আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র কীভাবে মোকাবিলা করবে— এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমাদের সুসংগঠিত হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ১৪ দলীয় জোটকেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাছে টানতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনে অনেকেই দলের নির্দেশনা মানেনি, তাদের বিষয়ে দল কী ব্যবস্থা নিবে— এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, অনেকেই এর মধ্যে প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন। আমাদের কয়েকজন আগেই প্রত্যাহার করেছেন। আমাদের গোলাম দস্তগীরের ছেলে প্রত্যাহার করেছেন।
আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, আমার স্বজনও একজন উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে প্রশ্নটা হচ্ছে, আমাদের সমর্থন আছে কি না? আমি তার পক্ষে প্রশাসন বা নির্বাচনকে প্রভাবিত করছি কি না, সেটাই সেটাই দেখার বিষয়। পার্টির কারো এর সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই, নেতৃস্থানীয় কারো এর সঙ্গে কোনো সমর্থন নেই। আমার সমর্থনের তো প্রশ্নই উঠে না।
স্বজন বলতে প্রধানমন্ত্রীর যে সংজ্ঞা সে বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার কথা হচ্ছে, ভাই হউক, স্বজন হউক আমি তাকে দাড় করিয়েছি কি না? আমি তার পক্ষে সমর্থন দিচ্ছি কি না? আমার দল সমর্থন দিচ্ছে কি না, সেটা হচ্ছে বড় কথা। আমি বা আমার দল যদি পক্ষে না থাকে তাহলে কেউ বিচ্ছিন্নভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার বিষয়ে জড়িত নেই।
বিরোধীদলের রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশে বিরোধীদল কথা ও বিবৃতিসর্বস্ব রাজনীতি করছে। মাঠে তাদের কোনো কর্মসূচি নেই। দ্বিধা-বিভক্ত বিএনপির ঘরের রাজনীতিও ঝিমিয়ে পড়েছে। নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে এবং আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করতে গিয়ে সারা দেশে যে অবস্থার সৃষ্টি করেছে, যে নেতিবাচক রাজনীতি করেছে- তাতে দলটির প্রতি জনগণের অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। আবার দল ক্ষমতায় আসবে, নেতারা এ কথা বললেও কর্মীরা তা বিশ্বাস করে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করি। বিশ্বে সংকটের যে প্রভাব-প্রতিক্রিয়া, বাংলাদেশেও সে প্রতিক্রিয়া থেকে জনগণকে পরিত্রাণ দিতে এবং এ সংকট সাময়িক হলেও তা দূর করতে কিছু বাস্তবমুখী কর্মসূচি নিতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, বেকার সমস্যা দূরীকরণ এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দলকে সুসংগঠিত করতে নেত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন এবং সেভাবে দলকে আমরা সাজিয়ে নিচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও এসএম কামাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।