জীবনধারা

ছোটবেলার অপর্যাপ্ত ঘুম বয়ঃসন্ধিতে জটিল রোগের কারণ!

মোহনা অনলাইন

বাচ্চাদের ঘুম নিয়ে মায়েদের নানা রকম অভিযোগ থাকে। কেউ রাতে একেবারেই ঘুমোতে চায় না। কোনওটির ঘুম আবার ভীষণ পাতলা। দিনের বেলা ঘুমিয়ে নিয়ে যে সেই ঘাটতি পূরণ হয়, তা নয়। দিনের পর দিন অপর্যাপ্ত ঘুম হলে বয়ঃসন্ধিতে ‘সাইকোটিক ডিজ়অর্ডার’ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্তত সাম্প্রতিক গবেষণা তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ছয় মাস থেকে সাত বছর বয়সি ১২,৪০০ শিশুর ঘুমের স্বাভাবিক প্রবণতা নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা করেছে ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী।  তাঁরা জানাচ্ছেন, ছোটবেলায় কম ঘুমোলে বয়ঃসন্ধিতে কল্পনার জগতে বিচরণ করা বা ‘হ্যালুসিনেট’ করার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে ‘সাইকোটিক ডিজ়অর্ডার’ বলা হয়। ‘জার্নাল অফ আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সাইকিয়াট্রি’-তে সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের মতে, শরীর ও মনের সার্বিক সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব রয়েছে। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রতিদিন অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন। তবে, শিশুদের ঘুমের চাহিদা একটু বেশি। শিশুদের মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি বিষয়। নাহয় ঘটে বিপত্তি।

বাচ্চারা কম ঘুমোলে পাল্টে যেতে পারে মস্তিষ্কের গড়ন। স্মৃতিশক্তিও ফিকে হয়ে যেতে পারে। মেধা কমে যাচ্ছে। স্থায়ীভাবে মস্তিষ্কের এই গড়ন পাল্টে যাওয়ার জেরে শিশুদের কেউ অবসাদে ভুগছে, কেউ আলস্যে, কেউ আবার কৈশোরেই নেশায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এমনটাই জানা গিয়েছে সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায়।

গবেষকরা জানিয়েছেন, কম ঘুমোলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে, আর ঘুমের ‌মধ্যেই মস্তিষ্কের স্মৃতি সঞ্চয় হয়। সারাদিন ধরে আমরা যা শিখছি তা সবই যে মস্তিষ্কের একদিকে জমা হয় তেমনটা কিন্তু নয়। বিষয় নিরিখে ভিন্ন প্রকোষ্ঠে তা সঞ্চিত হয়। ইতিবাচক স্মৃতিগুলি হিপোক্যাম্পাস অংশে জমে। আর নেতিবাচক স্মৃতিগুলি অ্যামিগডালা অংশে সঞ্চিত হয়। ঘুম কম হলে হিপোক্যাম্পাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই গঠনমূলক চিন্তা ভাবনাগুলি বেশি দিন মাথায় থাকতে চায় না।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button