রাত জেগে কাজ করা এখন অনেকের ক্ষেত্রেই সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা ফ্রিল্যান্সিং করেন তাদের ক্ষেত্রে রাত জেগে কাজ করাটা বেশ পরিচিত চিত্র। এতে করে ঘুমের স্বাভাবিক চক্রে ব্যাঘাত ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু দিনে কাজ এবং রাতে বিশ্রাম নেওয়ার বদলে উল্টোটা করলে তার প্রভাব শরীরে কেমন হয়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাত জেগে কাজ করার ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।
কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা-৬টা পর্যন্ত কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে চিন্তা করার, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। কারও কারও ক্ষেত্রে আচরণগত ফারাকও নজরে পড়ে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই সমীক্ষায় প্রায় ৪৮ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। জীবিকা এবং জ্ঞানভিত্তিক কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তাঁদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাপত্রে তার ফলাফল তুলে ধরেছেন। সম্প্রতি সেই তথ্য প্রকাশ করেছে দ্য ওপেন অ্যাকসেস জার্নাল পিএলওএস ওয়ান।
নিয়মিত রাত জেগে কাজ করা, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া মধ্যবয়সেই স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া এবং বয়সকালে ডিমেনশিয়া বা পার্কিনসন্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। গবেষকেরা বলছেন, শরীরে প্রতিটি কোষ সার্কাডিয়ান অর্থাৎ, দেহের নিজস্ব ঘড়ির সময় মেনে চলে। তার সুস্থ থাকতে গেলে সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হয় মানুষকে। ঘুমের চক্র, হজম ক্ষমতা, থেকে শরীরের তাপমাত্রা— দেহের এমন অনেক কর্মকাণ্ডই নির্ভর করে এই ঘড়ির উপর। তাই রাত জেগে থাকলে সার্কাডিয়ান ঘড়ির ছন্দ নষ্ট হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই অভ্যাস চলতে থাকলে শরীর, মাথা বিগড়ে যেতে বাধ্য।
রাত জেগে কাজ করার পর দিনের বেলা যতই ঘুমান না কেন তা পর্যাপ্ত হবে না। রাতের সময়টাতে সাত-আট ঘণ্টা ঘুম শরীরের জন্য জরুরি, তা না হলে শরীর এবং মনের ওপর প্রভাব পড়ে ব্যাপকভাবে।