জীবনধারা

ছোট থেকে সন্তানের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরির উপায়

মোহনা অনলাইন

ছোটবেলায় তৈরি হওয়া অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বাচ্চারা বড় হয়ে যাওয়ার পরও থেকে যেতে পারে। যা থেকে নানারকম স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদের ছোট থাকতেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে শেখালে তা তাদের সারাজীবন কাজে দেবে।

বাচ্চাদের মধ্যে ভালো ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরির এই টিপসগুলি দেখে নিন। এতে তাদের ভবিষ্যৎ হবে সুন্দর ও খাবারের সাথে সম্পর্ক হবে ইতিবাচক।

১. পরিবারের সবাই একসাথে খাওয়ার সময় ঠিক করে নিন

পুরো পরিবার একসাথে মিলে খাওয়া-দাওয়া করা সামাজিক ও আবেগজনিত উন্নয়নের জন্য কার্যকর। একসাথে খাবার খেলে বাচ্চাদের খাবারের পরিমাণ সম্পর্কে শেখানোর সুযোগ পাওয়া যায়। যেমন, তাদের দেখাতে পারেন যে, আমাদের প্লেটের অর্ধেক স্টার্চবিহীন সবজি ও ফলফলাদি থাকা দরকার।

তবে লম্বা সময় সবাই খাবার নিয়ে বসে না থেকে একটি নির্দিষ্ট লিমিট নির্ধারণ করুন। খাবার খাওয়ার জন্য ৩০ মিনিটের বেশি সময় না নেয়াই ভালো। একটি টাইমার সেট করুন, তাহলে বাচ্চারা খাবারের দিকে মনোযোগ দেয়ায় উৎসাহ পাবে।

২. সকালের নাস্তা করুন

সকালের নাস্তা কি আসলেই দিনের সবচেয়ে দরকারি খাবার? সব বেলার খাবারই দরকারি। তবে স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট বা সকালের নাস্তা আপনার সন্তানকে সারাদিনের জন্য দরকারি শক্তি যোগাবে ও বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।

সকালের নাস্তায় ভারি কিছু কিংবা অনেক কিছু খেতে হবে এমন না। তবে তা বাচ্চাদের শরীরে সারাদিনের জন্য মেটাবলিজম কিংবা বিপাকের শক্তি যোগাবে।

প্রতিদিন সকালবেলা কোনো অভিজাত ধরনের নাস্তা বানানো নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। তার চেয়ে বরং সহজ, বাচ্চারা পছন্দ করে এমন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ নাস্তা বানান।

৩. বেছে বেছে খাবার খাওয়ার অভ্যাস বদলানোর চেষ্টা করুন

বাচ্চাদের খাবার বেছে খাওয়ার অভ্যাস সামাল দেয়া প্রায়ই অসম্ভব বলে মনে হয়।, তবে ধৈর্য্য ও লক্ষ্য নিয়ে কাজ করলে এই অভ্যাস ছোটবেলায়ই বদলানো সম্ভব।

খাওয়ার সময় বাচ্চাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিন, যাতে তারা নতুন কিছু খাওয়ার চেষ্টা করতে পারে ও নতুন নতুন খাবার চিনতে পারে। বাচ্চাদেরকে নিজেদের খাবার পছন্দ করতে দিলে সবচেয়ে ভালো হয়। আর তাতে যদি তারা একটি বা দু’টি খাবার নির্বাচন করে, সেটাতেও কোনো সমস্যা নেই। বেছে খাবার খাওয়া বাচ্চার জন্য আলাদা করে খাবার বানাবেন না।

কিন্ডারগার্টেনে পড়ে বা তার চেয়ে বড় বাচ্চাদের জন্য, তিন-লোকমা নিয়ম করুন। আপনার সন্তানকে যেকোনো খাবার কমপক্ষে তিন লোকমা খেয়ে দেখতে হবে। তাহলেও বাচ্চারা যেকোনো খাবার অপছন্দ করছে কিনা তা বুঝতে ১৫ বার বা তার বেশি বার খেয়ে দেখবে।

৪. খাবারের প্ল্যান ও প্রেপ-এ বাচ্চাদের সাহায্য নিন

আমাদের সবার মতোই, বাচ্চারাও সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করে, আর তাদের কাছে নানা রকম অপশন দিলে তাতে তাদের নিজেদের স্বাধীন মনে হয়।

• তাদের বাজারে বা দোকানে নিয়ে যান। সহজ ও সাধারণ কিছু অপশন দিন, যেমন, “তুমি কি লাল আপেল কিনতে চাও, নাকি সবুজ আপেল?”

• তাদের একটি খাবার নির্বাচন করতে বলুন। মাঝে মাঝে রাতের খাবারে কোন সবজি রান্না হবে তা বাচ্চাদের পছন্দ করতে দিন। এতে তাদের সেই সবজি খাওয়ার আগ্রহও বাড়তে পারে।

• বয়স অনুযায়ী তাদের ছোট ছোট কাজ দিন। যেমন, বিভিন্ন উপকরণ একসাথে মিক্স করা, ফল ও সবজি ধোয়া, সেদ্ধ ডিম কিংবা আলু ছিলতে দেয়া ইত্যাদি।

৫. পুষ্টিগুণের তালিকা পড়ুন

একসাথে দোকানে গেলে, বাচ্চাদের বিভিন্ন খাবার দেখান ও পুষ্টিগুণের তালিকা পড়তে শেখান। তাদের সাথে বিভিন্ন উপকরণ রিভিউ করতে পারেন। কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা, চিনি ও ফ্যাট নিয়ে তাদের সাথে বয়সের উপযোগী করে কথা বলুন।

৬. খাবারের গুণ বোঝাতে হবে

যেকোনো ফল, ডাল দেখিয়ে বোঝাতে হবে এতে কী গুণ আছে। এই ফল খেলে কী উপকার হয়। গাজর খাওয়া কেন ভাল। ডিম খেলে কী হবে। খাবারের ভাল দিক বুঝাতে পারলে বাচ্চা খেতে উৎসাহ পাবে।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button