জীবনধারা

এই আমলগুলো করলেই বিয়ে হবে সহজে

মোহনা অনলাইন

বিয়ে মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চারিত্রিক পবিত্রতা বজায় রাখার অন্যতম মাধ্যম। হালাল ও পবিত্র বংশধারা বজায় রাখার জন্য বিয়ের বিকল্প নেই। এটি নবীদের সুন্নত। তাই মা-বাবা বা অভিভাকদের উচিত, সন্তান বা ভাই-বোন বিয়ের উপযুক্ত হলে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা।

আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে, যাদের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু বিয়ে করতে পারছে না, ফলে তারা হতাশায় ভোগে। নিম্নে সহজে বিয়ে হওয়ার জন্য কিছু করণীয় তুলে ধরা হলো—

পবিত্র জীবনযাপনের লক্ষ্যে বিয়ের বাসনা করা

প্রতিটি কাজের আগেই সে কাজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ঠিক করতে হয়। উদ্দেশ্য ভালো হলে সে কাজে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। বিয়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। কেউ যদি বিয়ের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করার উদ্দেশ্যে বিয়ে করতে আগ্রহী হয়, তবে সে মহান আল্লাহর গায়েবি মদদ পাবে।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা তিন ধরনের মানুষকে সাহায্য করা নিজের কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদকারী, মুকাতাব দাস—যে চুক্তির অর্থ পরিশোধের ইচ্ছা করে এবং বিয়েতে আগ্রহী লোক—যে বিয়ের মাধ্যমে পবিত্র জীবনযাপন করতে চায়। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৬৫৫)

গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা

বিয়ের আগের সময়টা যুবকদের জন্য অনেক স্পর্শকাতর। এই সময় শয়তান যুবক-যুবতীদের বিভিন্নভাবে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করে। তাই বিয়ের আগে নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। যুবক-যুবতী যদি দ্বিনদার হয়, তাহলে অন্য দ্বিনদার সচেতন পরিবার তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে আগ্রহী হবে। কেননা হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে এমন কোনো ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সঙ্গে (তোমাদের মেয়েদের) বিয়ে দাও।

তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৯৬৭) তাছাড়া যুবক-যুবতী দ্বিনদার হলে, তাদের অভিভাকরা তাদের দ্রুত বিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে নিজে থেকেই সচেতন থাকেন।

নিজেদের সমকক্ষ পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া

বেশির ভাগ মানুষ বিয়ের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান বিবেচনা না করে নিজেদের চাই বড় পরিবার কিংবা এমন মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকে, যারা এই পরিবারে মেয়ে বিয়ে দিতে সম্মত হবে না। তাই বিয়ের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান বিবেচনা করে সমকক্ষ কোনো দ্বিনদার পরিবারে বিয়ে করার চেষ্টা করা আবশ্যক।

আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ভবিষ্যৎ বংশধরদের স্বার্থে উত্তম নারী গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবেচনায় বিয়ে করো, আর বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৯৬৮)

সামর্থ্য অর্জনের পাশাপাশি রোজা রাখা

 কেউ বিয়ে করতে আগ্রহী হলে তার উচিত, বিয়ে করার সামর্থ্য ও যোগ্যতা অর্জন করা। কারণ ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী, অযোগ্যের সঙ্গে কেউ আত্মীয়তা করবে না। যত দিন তা অর্জন না হয়, তারা রোজা রাখতে পারে। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন।

আব্দুলাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিয়ের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে, আর যে ব্যক্তি বিয়ের সামর্থ্য না রাখে সে যেন সাওম (রোজা) পালন করে। কেননা সাওম (রোজা) তার কামভাবকে দমন করবে। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ২২৪১)

দোয়া করা

সহজে বিয়ে হওয়ার জন্য বেশি বেশি সালাতুল হাজত নামাজ পড়ে দোয়া করা যেতে পারে। বিশেষ করে কোরআনে বর্ণিত দোয়া—

 رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا 

উচ্চারণ: রব্বানা হাব লানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়া জাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা

অর্থ : ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন, যারা আমাদের চোখ শীতলকারী হবে এবং আমাদেরকে আল্লাহভীরুদের জন্য আদর্শ করুন। ’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৭৪) এছাড়া হাদিসে বর্ণিত বিশেষ দোয়াগুলো ও আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর আমলও করা যেতে পারে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button