কুষ্টিয়া শহরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ৮টায় কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা মসজিদ-সংলগ্ন একটি বাসায় তিন ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। তারা বলেছে, বিকেল ৫টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিন দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ এ সময় তারা ওই ভুবনের ভাড়াটিয়া ও আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ বিষয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, আজ আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। হয়তো অন্য কোনো বাহিনী করছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনসহ দুজনকে আটকের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি যে, কে বা কারা কাকে আটক করেছে। তবে খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনই নিশ্চিত করে কোনো কিছু বলতে পারছি না আমরা। তবে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
কালীশংকরপুর এলাকার ওই বাসার ভাড়াটিয়া শাহীন, সানজিদুর, ইভান বলেন, তিনতলা বিশিষ্ট এই ভবনের নিচ ফাঁকা ছিল। প্রায় দেড় মাস আগে আমাদের এই বিল্ডিংয়ের পেছনের বাসার মালিকের ছেলে বাসাটি ভাড়া নিয়ে তাদের উঠান। যে দুজন এই বসাতে থাকতেন তারা খুব বেশি চলাফেরা করতেন না। তাদের সঙ্গে আমাদের মেলামেশা ও পরিচয় ছিল না। তবে পাশের ভবনের মালিক তার আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, তারা ব্যাবসা করবে এবং এখানে থাকবে। এরপর থেকেই তারা দুজন এখানে থাকতেন।
আজকে কী ঘটনা ঘটেছিল এ প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ভোর ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর একটি টিম অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে নিয়ে যায়। দরজা ভেঙে তারা ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা পাশের ভবনের মালিকের ছেলের সঙ্গেও কথা বলেন। আমরা জানতে পেরেছি, সুব্রত বাইন নামে একজনকে সহযোগীসহ আটক করা হয়েছে। সুব্রত বাহিনীর চেহারার সঙ্গে মিলও খুঁজে পেয়েছি আমরা। অভিধানে অংশ নেওয়া কয়েকজন আমাদেরকে সুব্রত বাইনের নামও বলেছিলেন।
মেসের শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে নিচতলায় তল্লাশি চলে। ৮টার কিছু সময় পর কালো মাইক্রোবাসটি একদম গেটের সামনে চলে আসে। নিচতলা থেকে দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তিকে হাতকড়া পরা ও মাথায় গামছা বাঁধা অবস্থায় গাড়িতে তোলা হয়। আরেক যুবকের কোমরে ও শরীরে দড়ি দিয়ে বাধা ছিল।
ছাত্রদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মেসের পেছনের বাড়িতে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা আটকানো পাওয়া যায়। একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া মিলেনি।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন প্রকাশ্যে অপরাধে যুক্ত হন এবং আলোচনায় আসেন।



