
কুষ্টিয়া শহরের এক বহুতল ভবনের পার্কিং জোনে একটি ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা নিহত সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বলে ধারণা করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার (৯ জুন) রাতে ঘটনাস্থলে যায় এবং গাড়িটি সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করে। গাড়ির কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকারও উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই স্বপন বলেন, ‘গাড়ির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। গাড়ি থেকে গাড়ির কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- গাড়িটি ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হবে।’
স্থানীয়রা বলেন, আমরা গাড়িটির খবর পায়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাড়িটি দেখতে পান। পুলিশ গাড়ি থেকে গাড়ির কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার উদ্ধার করেছে। গাড়িটি ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাগজপত্রে তার নাম রয়েছে। এই গাড়িটি বেশ কয়েকমাস আগে বাড়ির গ্যারেজে রাখা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সাব্বির বলেন, ‘আমরা প্রথমে শুনতে পায় যে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের গাড়ি রাখা আছে সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজে। পরে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ গাড়ি থেকে গাড়ির কাগজপত্র উদ্ধার করেছে। সংসদ সদস্যের স্টিকার উদ্ধার করেছে। এই গাড়ির চালক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগার আলীর গাড়ি চালক ছিলেন এক সময়। তিনিই গাড়ি থেকে কাগজপত্র ও স্টিকার দেন পুলিশকে। গাড়ির কাগজপত্র দেখে বোঝা যায় যে, গাড়িটির মালিক ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী জুনায়েদ হোসাইন বলেন, ‘সাধারণ জনগণের কাছ থেকে আমরা একটি খবর পাই যে, সাফিনা টাওয়ারে একটি গাড়ি আছে। ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো ব্র্যান্ডের গাড়িটি কয়েকমাস ধরে রাখা আছে। বের করা হয় না, মাঝেমধ্যে স্টার্ট দেওয়া হয়। পরে আমরা সাফিনা টাওয়ারের নিচে গ্যারেজে গিয়ে দেখি অনেক দামি গাড়িটি। গাড়ির ড্রাইভার আমাদের দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পরে ড্রাইভার একজনকে কল দেন। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু উনি কোনো তথ্য দেননি। পরে পুলিশের টিম আসে এবং গাড়ির কাগজপত্র উদ্ধার করে। গাড়ির কাগজপত্র লাইসেন্স এসব দেখে জানতে পারি গাড়িটি আনার এমপির। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হোক। এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। যারা এই গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করেছেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে দ্রুত।’
স্থানীয়রা বলেন, জেনুইন লিফ কোম্পানি নামের একটা সিগারেট কোম্পানি ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তলা ভাড়া নিয়েছেন। তারাই গাড়িটি রাখার ব্যবস্থা করেছেন। এই গাড়িটা কয়েকমাস ধরে এখানে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হোক এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাফিনা টাওয়ারের মালিক, জেনুইন লিফ টোব্যাকোর সিইও জাহিদ ও জিএম বেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের অফিসে গিয়ে কেয়ারটেকার ও দারোয়ানকে ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি৷
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’