Top Newsবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন রুথবা ইয়াসমিন

মোহনা অনলাইন

বাংলাদেশি তরুণী রুথবা ইয়াসমিন এখন প্রস্তুত ইতিহাস গড়তে। তিনি হচ্ছেন সাহসী মহাকাশ অভিযাত্রী, যিনি স্পেস নেশনের মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে পা রাখার পথে রয়েছেন।

তার এই যাত্রা শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এটি বিশ্বের নারীদের মহাকাশ বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সুযোগ। সম্প্রতি তিনি স্পেস নেশনের মুন পায়োনিয়ার মিশনের জন্য প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। এই মিশনে একটি আন্তর্জাতিক দল চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে, যেখানে ৬ জন নারী সদস্য ও ১ জন পুরুষ সদস্যসহ মোট ৭ সদস্যের দল চাঁদে যাবেন। এবং তাদের মধ্যে একজন হলেন বাংলাদেশের গর্ব রুথবা ইয়াসমিন। তিনি হবেন প্রথম বাংলাদেশি নারী, যিনি মহাকাশে পা রাখবেন এবং বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা চাঁদের বুকে তুলে ধরবেন।

রুথবার এই যাত্রা বিশ্বব্যাপী একটি নতুন বার্তা বহন করছে: মহাকাশ আর শুধুমাত্র পুরুষের এলাকা নয়। নারীও সক্ষম, দৃঢ় এবং প্রস্তুত চন্দ্র অভিযানে নেতৃত্ব দিতে। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যদি আমি ইতিহাস গড়তে পারি, তাহলে তা শুধু আমার জন্য নয়, পৃথিবীজুড়ে নারীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে।”

রুথবার যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা শহরের স্কলাস্টিকা স্কুলে, যেখানে তিনি মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মাউন্ট হলিওক কলেজে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেন এবং করোনা মহামারির সময়ে দেশে ফিরে ডেটা সায়েন্সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০২৪ সালে তিনি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করবেন।

তার মহাকাশে আগ্রহের সূচনা হয়েছিল থিসিস গবেষণার মাধ্যমে, যেখানে তিনি স্পেস ওয়েদার বিশেষ করে জিওম্যাগনেটিক স্টর্মস নিয়ে কাজ শুরু করেন। চাঁদে যাত্রার জন্য রুথবাকে কঠিন প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, যার মধ্যে মহাকাশ স্যুট পরিধান, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম পরীক্ষা এবং চাঁদে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করা অন্তর্ভুক্ত।

এক প্রশিক্ষণে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের ত্রুটি মোকাবেলা করতে গিয়ে চাঁদের বাহিরে ইভিএ (Extravehicular Activity) করতে হয়েছিল, যা অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্ত ছিল। তিনি বলেন, “যখন সমস্যা দেখা দেয়, তখন আমাদের দ্রুত নতুন নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হয় এবং সময়মতো সব কাজ শেষ করতে হয়।”

রুথবা ইয়াসমিন তার অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের তরুণীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যে কেউ যদি মহাকাশে আগ্রহী হয়, তবে তার জন্য এই ক্ষেত্রে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত রয়েছে। এস্টেম (STEM) শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি কোনো ক্ষেত্র থেকে আসছে, তার কোনো বাঁধা নেই।”

তিনি আরও বলেন, “কৌতূহল, সাহস, সমালোচনামূলক চিন্তা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং নিজেদের সত্যিকার পরিচয় ধারণ করা—এগুলো হলো মহাকাশে সাফল্য অর্জনের মূল চাবিকাঠি।” রুথবা ইয়াসমিনের মতে, মহাকাশ শিল্পে নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং তাদের অবদানকে সম্মানিত করা উচিত। যেমন, নাসার নারী বিজ্ঞানীরা অ্যাপোলো মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। নারীদের অবদানকে গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের নারী বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং মহাকাশ অনুসন্ধানী তৈরি হবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button