Top Newsজাতীয়

শাবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ-ভিডিও ধারণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ২

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে দলবেঁধে ধর্ষণ ও এর ভিডিও ধারণের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে; গ্রেপ্তার হয়েছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সিলেট কোতোয়ালি থানায় ঘটনার শিকার দাবি করা শিক্ষার্থী এ মামলা করেন বলে জানান মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম।

এর আগে গত ২ মে রাতে নগরীর একটি ছাত্র মেসে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, একাধিক ব্যক্তি বাদীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। একইসঙ্গে গোপনে তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়, যা তার সামাজিক মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে প্রচার করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হিসেবে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়ার খুলিয়াপাড়ায় এলাকার জান্নাত মঞ্জিল এলাহী বি-৯/২ এর একটি ছাত্র মেসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাতেই আদনান ও পার্থকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আদনান ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামিও।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ২৪ সালের ৮ মার্চ ছাত্রলীগের দু-পক্ষের সংঘর্ষের অভিযোগে শান্ত তারা আদনানকে ১১ মার্চ হল থেকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অন্যদিকে, মামলার দুই নম্বর আসামি স্বাগত দাশ পার্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন দিক থিয়েটারের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এ ঘটনার পর তার সাংগঠনিক পদ বাতিল করা হয় বলে সংগঠনটির অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে পোস্টে জানানো হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, “মামলায় দুই আসামিকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালের দিকে তাদের আদালতে উঠানো হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান বলেন, “এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।”

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দুপুর ২টা, বেলা সাড়ে ৩টা ও ৫টায় মোট তিন দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বেলা সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, “আমরা ২৪ পরবর্তী সময়ে একটি ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ কল্পনা করেছিলাম। কিন্তু দুঃখ নিয়ে বলতে হয়, যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বারবার নারী অধিকারের কথা বলা হয়, আজ সেখানেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম হয়েছে। এটি শুধু লজ্জার নয়, বিব্রতকরও। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ধর্ষকের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button