
আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল হার্ট। এই অঙ্গটি দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দেয়। তার ফলেই কোষগুলি খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারে। তাই তো সুস্থ থাকতে হার্টের খেয়াল রাখাটা খুবই জরুরি।হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের মতে চারটি জিনিস হৃদয়ের জন্য বিষের মতো। এগুলিকে জীবন থেকে বাদ দিলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
হৃদয়ের যত্নে সামান্য অবহেলাও জীবনের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। শুধু ২০২৩ সালেই বিশ্বজুড়ে প্রায় ১.৭৯ কোটি মানুষ কার্ডিওভাসকুলার রোগে প্রাণ হারিয়েছেন। অর্থাৎ, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ হৃদরোগের কারণে মারা যাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে হৃদয়কে সুস্থ রাখা শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং অত্যন্ত জরুরি। এই কারণেই বিশিষ্ট কার্ডিয়োলজিস্ট ডঃ জেরেমি লন্ডন একটি ভিডিওর মাধ্যমে জানিয়েছেন এমন ৪টি জিনিসের কথা, যেগুলোর স্পর্শ পর্যন্ত তিনি নিজের জীবনে করেন না। কারণ এই জিনিসগুলো সরাসরি হৃদয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
সেগুলো কী-কী, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ধূমপান:
ধূমপান এমন একটি খারাপ অভ্যাস যা একজন মানুষের স্বাস্থ্যের পুরো কাঠামোকে ধ্বংস করতে পারে। এটি শুধু ফুসফুসকেই নয়, হৃদয়ের স্পন্দনকেও বাড়িয়ে দেয় এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়ায়। CDC-এর রিপোর্ট বলছে, আমেরিকায় হৃদরোগে যে প্রতি চারটি মৃত্যুর একটি ঘটে, তার পিছনে ধূমপান একটি বড় কারণ।
মদ্যপান:
“আপনার শরীর, আপনার নিয়ম—তবুও আমি মদ্যপানকে ‘না’ বলি,” বলেন ডঃ লন্ডন। WHO-ও জানিয়েছে যে, অ্যালকোহলের কোনো স্তরই নিরাপদ নয়। এটি শরীরের প্রতিটি কোষের জন্য বিষাক্ত এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়, লিভার এবং মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই, যদি হৃদয়কে সুস্থ রাখতে চান, মদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই ভালো।
সফট ড্রিঙ্কস:
সফট ড্রিঙ্কসকে বলা হয় ‘লিকুইড ডেথ’। এই পানীয়গুলোতে চিনি থাকে অতিরিক্ত এবং পুষ্টি একেবারেই নেই। এগুলোই স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের প্রধান কারণ। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন—এগুলো একেবারে ছেড়ে দিন, কখনোই গ্রহণ করবেন না।
আটা:
রিফাইন্ড আটা (ময়দা) ব্রেড, পাস্তা ইত্যাদি রিফাইন্ড ফ্লাওয়ার বা ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার—ডঃ লন্ডনের মতে, হৃদয়ের সবচেয়ে বড় শত্রু। এগুলো রক্তে চিনির মাত্রা দ্রুত বাড়ায়, ওজন বাড়ায় এবং আস্তে আস্তে হৃদরোগের ঝুঁকিও তৈরি করে। তিনি বলেন, ওজন নিয়ন্ত্রণ ৮০% ডায়েট ও ২০% ব্যায়ামের ওপর নির্ভর করে। তাই, পরিশোধিত নয় এমন খাবার এবং সম্পূর্ণ শস্য খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।