হত্যা করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ নিহতের বাবার!
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরের সিংগারদীঘি গ্রামে ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন ফজলুল হক ফরাজী নামের এক বাবা।
আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেল চারটায় নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমের কাছে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
এরআগে, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার ঢাকা -ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সামনে থেকে দুমড়ে মুছড়ে যাওয়া একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ফজলুল হক ফরাজীর ছেলে মোঃ মাহফুজ ফরাজীকে(১৭) । তাকে প্রথমে শ্রীপুরের মাওনা আল হেরা হাসপাতাল, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সব শেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়। মাহফুজ ফরাজী একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ও লেভেল শেষ করেছিলেন।
অভিযুক্ত মোঃ তৌফিক (২০) শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। তৌফিক রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
নিহত মাহফুজ ফরাজীর বাবা মোঃ ফজলুল হক ফরাজী গণমাধ্যমের কাছে বলেন, তৌফিক সম্পর্কে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে তিনি নেতিবাচক কথা শুনেছেন। তার ছেলের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন যাবত ঘনিষ্ঠভাবে মিশতে দেখেন তিনি। সম্প্রতি তৌফিককে তার ছেলের সঙ্গে মিশতে নিষেধ করেন তিনি। ফজলুল হক ফরাজী আরো বলেন, সোমবার রাত ৯ টায় তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায় তৌফিক। এরপর রাত দেড়টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনার খবর পান তিনি। সেখান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মাহফুজকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি এটি হত্যাকান্ড। মেয়ে সংক্রান্ত একটি বিষয়ের জের থাকতে পারে। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার নাটক সাজিয়েছে’
অভিযুক্ত মোঃ তৌফিক রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ আমার ছেলে মৃত্যু শয্যায়। একই গাড়িতে তারা ছিলেন। এটা কিভাবে হত্যাকাণ্ড হয়। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে পারব না’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, ঘটনাস্থল যেহেতু সদর থানার আওতাধীন সেহেতু নিহতের পরিবারকে সেখানে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আমরা শুধুমাত্র গাড়ী উদ্ধার করেছি। যেহেতু শ্রীপুরের বাড়ি থেকে ভিক্টিমকে ডেকে নিয়ে এসেছে সেহেতু এ অভিযোগের তদন্ত করবে শ্রীপুর থানা পুলিশ। তারপরও নিহতের স্বজনরা আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো”।