সংবাদ সারাদেশ

ফেসবুক-ইউটিউবারদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ পশুর হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা! 

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

বড় ক্যামেরা, হাতে লম্বা তার ওয়ালা মাইক্রোফোন, গলায় প্রেস লিখা ফিতা আর বুকে ব্যাগ ঝুলিয়ে জনাকীর্ণ পশুর হাটে ভীর ঠেলে এগুচ্ছে কয়েকজন। হাটে পশু বিক্রি অথবা পছন্দের পশু কিনে বের হতেই ওই সকল ফেসবুক ও ইউটিউবারদের কবলে পড়তে হচ্ছে জনসাধারণের। এছাড়াও হাটে পশু নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, দামদর ঠিক করার মুহূর্তে  কিংবা পশু হাসিল করার সময়কালে ওরা প্রশ্ন নিয়ে হাজির। সেসময় পশু সামলাবেন নাকি ইউটিউবারদের প্রশ্নের জবাব দেবেন, তাই নিয়ে বিড়ম্বনা পড়ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা।

এদিকে, ওদের দৌরাত্ম্যে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মূলধারার গণমাধ্যমকর্মীদেরও। ইউটিউবারদের কারণে প্রতিবেদকদের সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলতে চান না হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা।

বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবারে উপজেলার বরমী, মাওনা ও শ্রীপুর পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। হাটের ব্যস্ত মুহূর্তে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ঘিরে ধরেন একদল ইউটিউবার। গরু নিয়ে আসতে দেখলেই ক্রেতাদের ঘিরে ধরছেন তারা। দাম কত বলে ভিডিও করতে শুরু করেন। দাম না বলা পর্যন্ত ক্রেতাদের পেছনে দৌড়াতে থাকেন তারা।

রাজেন্দ্রপুর থেকে শ্রীপুরে গরু কিনতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমি গরু কিনেছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে। গরু কিনে শ্রীপুর হাটের গেট দিয়ে বের হওয়ার পরেই আমাকে ঘিরে ধরেছেন ইউটিউবাররা। এরা জানতে চাইছেন দাম কত, ওজন কত হবে, কোথায় যাবো নানা বিষয়”।

বরমী পশুর হাটে আসা শামীম নামে এক গরুর ব্যাপারী বলেন, “আপনাদের কতো সাংবাদিক?। ভালো করে কথা বলতে পারেনা ওরা নাকি সাংবাদিক। আমাদেরকে জিজ্ঞেস করার কতো ভাষাটাও ঠিকমতো বলতে পারেনা। আপনারা ওদের থামান “।

গত বুধবার উপজেলার বরমী হাটে কয়েকজন ইউটিউবারকে ভিডিও করতে দেখা যায়। গরুর দাম কত, ওজন কত, তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে দেখা যায় হাটে আসা ক্রেতাদের। তাদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের একজন বলেন, আমি ব্লগ বানাই। আমার ২ হাজার ফলোয়ার আছে। দুইটা ইউটিউব চ্যানেল আছে আমার। এতো বর লোগো ব্যবহারের কোনো নিয়ম জানেন কিনা এমন প্রশ্ন করতেই সটকে পড়ে তারা।

মাওনা বাজারে এসেছেন বড় ক্যামেরাসহ ৩জন ফেসবুকার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” আমার দুইটা পেইজ আছে। ভিডিও প্রায় মিলিয়ন ভিউয়ার।

ইউটিউবার ও ফেসবুকারদের কারনে মূলধারার সাংবাদিকরা বিড়ম্বনায় রয়েছেন। তথ্য সংগ্রহে বেগ পেতে হচ্ছে  জানিয়ে আর টিভির শ্রীপুর প্রতিনিধি রায়হানুল ইসলাম আকন্দ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইউটিউবারদের জন্য নীতিমালা করা উচিত। না হলে গণমাধ্যমকর্মীরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এ এফ এম নাসিম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, “হাটের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা স্বাভাবিক করতে অভিযান চলমান।

শ্রীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতিকুর রহমান বলেন,”উপজেলায় এ বছর ১৭ হাজার পশুর চাহিদা থাকলেও ৫০০ খামারীর চেষ্টায় প্রায় ১৯ হাজার পশু প্রস্তুত আছে। উপজেলায় ১৯ টি পশুর হাটে পশুর স্বাস্থ্য ও গর্ভ পরীক্ষার জন্য আমাদের ক্যাম্প রয়েছে। আমরা সর্বদাই মাঠে রয়েছি”।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button