শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন শুরু থেকেই রাজ্যজুড়ে সহিংসতা, ব্যালটবক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দিনভর সংঘর্ষ, সহিংসতা এবং শুরু থেকে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে অন্তত ১৮ জনের প্রাণ গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদ প্রতিদিন।
সবচেয়ে অশান্ত ছিল মুর্শিদাবাদ জেলা। শুক্রবার রাত থেকে এই জেলায় দফায় দফায় বোমাবাজি ও গোলাগুলি চলে। ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই কাপাসডাঙায় এক তৃণমূল কর্মীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। তার নাম বাবর আলি। নিজের বাড়ির বাইরে খুন হন বাবর। তাকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে ও পরে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
মালদহ, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়ও সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকজনের। এছাড়াও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন দলের কর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, ভোট শেষে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে অশান্তির কথা বলা হচ্ছে, তা সামগ্রিকতার নিরিখে এক শতাংশেরও কম জায়গায় হয়েছে।
বিরোধীরা অবশ্য একযোগে ভোটলুঠের অভিযোগে সরব হয়েছে। এই অভিযোগে এ দিন রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন দফতরের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ভোট হয়নি। লুঠ হয়েছে। হাই কোর্টে যাব।’ সেই সঙ্গেই রাজ্যে ৩৫৫ বা ৩৫৬ জারির দাবিও তোলেন তিনি।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ জায়গায় তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেসের। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘ভোটের দিন যা হল, তার দায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের। তবে এত হুমকি, মারধর, গুলি, বোমার সামনেও বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।’
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কটাক্ষ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘দিদি, আপনি জিতে গেছেন। আপনাকে অভিনন্দন! রাতেই ব্যালট বুথের বাইরে চলে গিয়েছে। ছাপ্পা মেরে তা আবার বুথে নিয়ে এসেছে। নির্বাচনের নামে এইরকম নোংরামি বাংলার ইতিহাসে কখনও হয়নি।’