সংবাদ সারাদেশ

জনতা ব্যাংকের গ্রাহকের প্রায় ৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও পিয়ন

জুবায়েল হোসেন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর শাখার পিয়নের বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর থেকে ওই পিয়ন মোঃ রঞ্জু আকন্দ উধাও রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

সকালে জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখায় প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক তাদের জমাকৃত অর্থ অ্যাকাউন্টে দেখতে না পেয়ে ব্যবস্থাপকের কার্যালয় ঘেরাও করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শাহজাদপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ সময় ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান, জনতা ব্যাংকের পিয়ন শাহজাদপুর পৌর এলাকার পাড়কোলা গ্রামের মৃত নুরুল আকন্দের পুত্র ও শাহজাদপুর উপজেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পোড়কোলা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ রঞ্জু আকন্দ দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকে আগত সহজ সরল গ্রাহকদের সহযোগিতা করার কথা বলে তাদের জমাকৃত অর্থ নিজের কাছে রেখে ব্যাংকের সিল স্বাক্ষর মেরে রিসিভ কপি গ্রাহককে দিয়ে দিতো।

কখনও গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে আসলে চেক জমা রেখে নিজের টাকা দিয়ে দিতো। এভাবে বিভিন্ন প্রবাসীদের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমার কথা বলে তা অ্যাকাউন্টে না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিতো। কখনও টাকা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা দিলেও সে টাকা অ্যাকাউন্টে জমা না হওয়ায় ব্যাংকের ক্যাশিয়ার, ম্যানেজার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুক্তভোগীদের প্রায় ৫ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে জানায় গ্রাহকেরা।

রঞ্জু ব্যাংকের চুক্তিভুক্ত পিয়ন হয়েও রহস্যজনক কারণে মূল ফটকে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে গ্রাহকদের সাথে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন করলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। রঞ্জু সব সময় নিজেকে জনতা ব্যাংকের এমডি আব্দুস সালামের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চোখের সামনে অপকর্ম চালিয়ে যেত।

এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখা ব্যবস্থাপক জেহাদুল ইসলাম জানান, পিয়ন রঞ্জু আকন্দ ব্যাংকের নকল সিল তৈরি করে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেছে। সে ব্যাংকের এমডির আত্মীয় পরিচয় দিয়ে সবাইকে জিম্মি করে অপকর্ম করেছে।

জনতা ব্যাংক লি. এর এরিয়া অফিস সিরাজগঞ্জ ডিজিএম জাহিদুল আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই অস্থায়ী পিয়ন রঞ্জু গ্রাহকদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং সে বর্তমানে উধাও হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী প্রতারক রঞ্জুকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

 

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button