বেপারির অবহেলায় আকাশমণি গাছ পড়ে নারীর মৃত্যু!
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
বাড়ির পাশে বন বিভাগের উপকারভোগীর অংশীদারিত্ব ভিত্তিক প্লটে গত ২ দিন ধরে আকাশমণি গাছ কাটা হচ্ছিল। সোমবার গোড়া থেকে কাটা একটি গাছ পাশের অন্য একটি গাছের সাথে আটকে ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহিদা আক্তার নামের এক নারী লাকড়ি আনতে ওই কাটা গাছের কাছে যান। এসময় হঠাৎ অপর গাছে আটকে থাকা আকাশমনি গাছটি শাহিদার উপর পড়ে যায়। এতে তিনি গাছের নিচে চাপা পড়েন। এতে মাথার রক্তক্ষরণ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহিদা। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলারপটকা গ্ৰামে।
সোমবার (১০ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহিদা।
নিহত মোছাঃ শাহিদা আক্তার (৫৫) ওই গ্রামের মৃত ফজলুল হকের স্ত্রী । সকাল ১০টায় গাছ চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতের স্বজনেরা জানান, শ্রীপুরের পটকা কালার ভিটা নামক স্থানে বন বিভাগের উপকারভোগীর অংশীদারিত্ব ভিত্তিক প্লটে গত ২ দিন ধরে আকাশমণি গাছ কাটা হচ্ছিল। সোমবার গোড়া থেকে কাটা একটি গাছ পাশের অন্য একটি গাছের সাথে আটকে ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাহিদা আক্তার লাকড়ি কুড়াতে ওই কাটা গাছের কাছে যান। হঠাৎ অপর গাছে আটকে থাকা আকাশমনি গাছটি সাহিদার উপর পড়ে যায়। এতে তিনি গাছের নিচে চাপা পড়েন। এসময় তার মাথার এক পাশে রক্তক্ষরণ হয়। তাঁকে উদ্ধার করে স্বজনরা হাসপাতালে পাঠায়। তারা বলেন, বেপারি অবহেলা করে এমন ভাবে গাছ ঝুলিয়ে রেখেছে যে নিচে যেতেই পড়ে যায়।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের মোঃ শাহজাহান গাছগুলো শ্রমিক দিয়ে দুদিন ধরে কাটছিলেন। তবে মোঃ শাহজাহান বলেন, ‘ আমি সেখানে কোনো গাছ কাটছি না। এ বিষয়ে আমার জানা নেই ‘
নিহতের দেবর আবুল হোসেন বলেন, গাছের নিচে চাপা পড়ার পরও সেখানে গাছ কাটা হচ্ছিল । মারা যাওয়ার খবরের পর তাদের আর পাওয়া যায়নি। যারা গাছ কাটছিলেন, তাদের পরিচয় তারা জানেন না।
শ্রীপুর সদর বিট কর্মকর্তা মোঃ আলাল খান বলেন, সেতু টিম্বার নামের একটি প্রতিষ্ঠান বন বিভাগ থেকে কার্যাদেশের মাধ্যমে গাছ কাটার অনুমতি পায়। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ গিয়াস উদ্দিন। তিনি গাজীপুরের সালনা এলাকার বাসিন্দা। তবে তিনি অন্য কাউকে দিয়ে গাছ কাটাচ্ছিলেন কি না তা তিনি জানাতে পারেননি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আলম মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।