বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মস্তিষ্কের সবচেয়ে বিশদ মানচিত্র পেলেন বিজ্ঞানীরা

মোহনা অনলাইন

মস্তিষ্কের বেশিরভাগটাই বিজ্ঞানীদের এখনও অজানা। সেই গোলকধাঁধায় পথ খোঁজার চেষ্টায় মস্তিষ্কের একটি ‘মানচিত্র’ তৈরি করেছেন তারা। এতে তিন হাজারেরও বেশি ধরনের কোষ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু কোষের কথা আগে কেউ জানতেনই না। বলা হচ্ছে— মস্তিষ্কের এত বিশদ মানচিত্র আগে তৈরি হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ‘ফ্লোরে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড মেন্টাল হেল্‌থ’-এর স্নায়ুবিজ্ঞানী অ্যান্টনি হ্যানান বলেন, খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই গবেষণা। এর আগেও বিজ্ঞানীরা ‘ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্স ইমেজিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে মস্তিষ্কের মানচিত্র তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সেটায় এত বিশদ তথ্য ছিল না। এই প্রথম কোষ-স্তরে সম্পূর্ণ মস্তিষ্কের অ্যাটলাস তৈরি করা হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েকশো বিজ্ঞানী এই গবেষণায় যুক্ত। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল, মস্তিষ্কের কোষের ক্যাটালগ তৈরি করা। শুধু মানুষ নয়, শিম্পাঞ্জি থেকে ইঁদুর, বিভিন্ন প্রাণীদের মস্তিষ্কের কোষ ও তার প্রকারভেদ সংক্রান্ত নানা তথ্য একত্রিত করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ ভাবে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অসুখ ও তার কারণ সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।

মস্তিষ্কের মানচিত্র তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন নেদারল্যান্ডসের ‘ইউনির্ভাসিটি মেডিক্যাল সেন্টার ইউট্রেক’-এর স্নায়ুবিজ্ঞানী কিম্বারলি সিলেটি ও তাঁর দল। তারা মস্তিষ্কের ১০৬টি জায়গার ৩০ লাখেরও বেশি কোষের আরএনএ সিকোয়েন্সিং করেছেন। কিম্বারলি ৪৬১ ধরনের কোষের সন্ধান পেয়েছেন। সেই কোষগুলোর মধ্যে আবার ৩০০০ সাবটাইপ রয়েছে।

তিনি বলেন, এত ধরনের কোষ দেখে চমকে গেছি। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আরেক বিজ্ঞানী স্টেন লিনারসন বলেন, মস্তিষ্ক বা ব্রেন ও স্পাইনাল কর্ডকে জুড়ে রাখে ব্রেনস্টেম। এই অংশে সবচেয়ে বেশি ধরনের নিউরন বা স্নায়ুকোষ থাকে। আমরা এই গবেষণায় দেখেছি, ব্রেনস্টেম কতটা জটিল একটা অংশ।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকিউলার বায়োলজিস্ট বিং রেন জানান, এই গবেষণায় মস্তিষ্কের অসুখগুলোর পাশাপাশি তার পেছনে থাকা ব্যতিক্রমী জিনের কারসাজিও ধরা পড়েছে। এ ভাবে ব্রেন ডিসঅর্ডার সম্পর্কে ভালো ভাবে জানা যাবে। আর রোগ বোঝা গেলে তার নিরাময়ও ঠিকই পাওয়া যাবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button