ক্লান্তি দূর করার মতো অবসর বা সুযোগ অনেকেই পান না। এমন ক্ষেত্রে মানসিক চাপ আরও বেশি ক্লান্তির সৃষ্টি করে। তাই যতটা সম্ভব নিজেকে মানসিক চাপ মুক্ত রাখার চেষ্টা করা উচিত।
মানসিক চাপ জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানসিক চাপ থাকবেই। আমাদের লক্ষ হবে মানসিক চাপ কমিয়ে বা চাপমুক্ত হয়ে জীবন চলার পথে অগ্রসর হওয়া। পারিবারিক, অর্থনৈতিক, কর্মক্ষেত্র, সম্পর্কের টানাপোড়নসহ নানা কারণে মানসিক চাপ হতে পারে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডের উপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি এড়াতে এ কারণে বার বার মানসিক চাপ কমানোর কথা বলেন চিকিৎসকেরা।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে যা করবেন–
১. জিভের ডগাটি সামনের দাঁতের ঠিক পিছনে রাখুন এবং শ্বাসক্রিয়ার ওপর খেয়াল রাখুন। শ্বাস ছেড়ে ফুসফুস খালি করুন। নাক দিয়ে চার সেকেন্ড শ্বাস নিন। শ্বাস সাত সেকেন্ড ধরে রাখুন। ঠোঁট খানিকটা চোখা করে শিস দেওয়ার মতো আট সেকেন্ড সময় নিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। চারবার এই একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
২. নিজেকে একটু আলাদা রাখুন। বাইরে হাঁটতে যান, দৌঁড়ালে আরও ভালো হয়। ধ্যান আপনার মনকে শান্ত করবে। শরীরচর্চা শরীরে এনড্রোফিনের নিঃসরণ করবে, এই হরমোন মন ভালো রাখে।
৩. বই পড়া, হাসির অনুষ্ঠান দেখা, সিনেমা বা পছন্দের যে কোনো কাজ আপনার মনে আনন্দ যোগাবে। নিজের পছন্দের কাজ, সৃজনশীল কাজ যেমন- খেলা, গান শোনা, ছবি আঁকা বা হতে পারে কারুশিল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করুন।
৪. প্রতি দিন অন্তত পক্ষে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। সারা দিনের কাজের পর শরীর এবং মনকে নতুন করে কর্মোপযোগী করে তুলতে ঘুমের প্রয়োজন আছে। এ কারণে হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে ঘুমের বিকল্প নেই।
৫. মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের এই যুগে মানুষের মধ্যে সামাজিকতা অনেকটা কমে গেছে। অবসাদ, মানসিক চাপ কাটাতে পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বেশি করে সময় কাটাতে হবে। নিজের কোনো প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগ করে নিন। এতে মানসিক চাপ কমবে।
৬. গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাণীদের সঙ্গে যোগাযোগ কর্টিসোল হরমোনের কারণে হওয়া মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। পোষা প্রাণী- কুকুর বা বিড়ালের সঙ্গে খেলা একাকিত্ব ও অবসাদ কমায়। মন ভালো করতে সহায়তা করে। কারও পোষা প্রাণী না থাকলেও সমস্যা নেই,। আশপাশে থাকা কোনো প্রাণীকে খাওয়ানো, তার সঙ্গে সময় কাটানো ইত্যাদিও মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।