বয়স চল্লিশ পার হলে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নটা একটু বেশিই নিতে হয়। নিয়ম মেনে না চললে এই বয়সে বহু জটিল রোগ বাসা বাধতে পারে দেহে। তাই এই বয়সে শরীর ঠিক রাখতে চাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি। ৪০-এর পর অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন– মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ খেতে হবে নিয়মিত। খাবার খেতে হবে সময়মতো।
কথায় বলে, জীবন শুরু হয় চল্লিশের পরে। তবে এই বয়সে শরীর ঠিক রাখতে চাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি। নারী কিংবা পুরুষ প্রত্যেকেই উচ্চতা অনুযায়ী আইডিয়াল ওজন বজায় রাখার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে ৬০ মিনিট ব্যায়াম করলে হার্টরেট ও ব্লাড সার্কুলেশন ইমপ্রুভ করে।
চল্লিশের পর যেসব খাবার খাবেন-
১. লোহিত রক্ত কণিকা ও মস্তিষ্ক শুষ্ক রাখতে ভিটামিন বি ১২ জুরুরি। যা দুধের তৈরি খাবার, মুরগি, মাছ ও ডিমে পাওয়া যায়। আর যারা নিরামিষভোজি তাদের পরিপূরক খাবার ভিটামিন ট্যাবলেট হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।বয়স্কদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি শোষণকারী অ্যাসিড তৈরি হয় না। ভিটামিন বি-১২’য়ের স্বল্পতা হতাশা ও মানসিক অশান্তি সৃষ্টি করে।
২. এ বয়সে হাড়ের জন্য ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান। হাড়ের ভর নিয়ন্ত্রণ করতে এস্ট্রোজেন উপকারী। তাই মেনোপোজের পর নারীদের হার অপেক্ষাকৃত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ভিটামিন ডির মাত্রা কমে গেলে ক্যান্সার, হাঁপানি, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আলাদাভাবে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নেয়া ভালো হবে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, ভিটামিন ডি’য়ের মাত্রা কমে যাওয়া ক্যান্সার, হাঁপানি, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া কঠিন। তাই আলাদাভাবে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা ভালো হবে।
৩. এ সময় পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা না হলে হাড় থেকে এর ঘাটতি পূরণ হয়। ফলে হাড় দুর্বল হওয়া শুরু করে। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক নারীদের জন্য দৈনিক এক হাজার মিলিগ্রাম এবং পুরুষদের জন্য ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীরা খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন- কাঠবাদাম, কমলা, মটর, কপি ও পালংশাক যুক্ত করলে উপকার পাবেন।
৪. এ সময় ত্বক ভালো রাখতে ও দেহে বয়সের ছাপ কমাতে এবং হৃদরোগ, ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগ থেকে বাঁচতে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
৫. তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা-থ্রি হল- ইপিএ, ডিএইচএ এবং এএলএ। ইপিএ এবং ডিএইচএ পাওয়া যায় মাছ থেকে। এএলএ পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ খাবার যেমন- আখরোট, তিসির বীজ ও চিয়া বীজ থেকে। ওমেগা-থ্রি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। ইউরোপের এক ক্লিনিকের করা পরীক্ষা থেকে জানা যায় যে, মাছের তেলও এক্ষেত্রে কার্যকর। মাছের তেলে ইপিএ ও ডিএইচএ থাকে। এছাড়াও শৈবালের তেলেও ডিএইএ পাওয়া যায়। তাই যারা মাছ খান না তারা এটা বেছে নিতে পারেন।
যে কোনো ধরনের ওষুধ ও ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।