আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপের মহাকাশ সংস্থার সম্মিলিত প্রয়াসে গড়ে উঠেছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র (আইএসএস)। এই স্পেস স্টেশনেরই নাকি ইতি টানতে চলেছে নাসা।
আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপের মহাকাশ সংস্থার সম্মিলিত প্রয়াসে গড়ে উঠেছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র (আইএসএস)। এই স্পেস স্টেশনেরই নাকি ইতি টানতে চলেছে নাসা। ২৫ বছর ধরে কক্ষপথে (লোয়ার আর্থ অরবিট) রয়েছে আইএসএস। শীঘ্রই স্পেস স্টেশনকে কক্ষপথচ্যুত করার পরিকল্পনা করেছে নাসা।
নাসা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা না করলেও মনে করা হচ্ছে, ২০৩০ সালে আইএসএসের ‘মৃত্যু’ ঘটতে চলেছে। নাসার পাশাপাশি ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইউএসএ) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (সিএসএ)-ও এ বিষয়ে তাদের সমর্থন জানিয়েছে। রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমস ২০২৮ সাল পর্যন্ত আইএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে বলে ঘোষণা করেছে।
তবে ১০৯ মিটার দীর্ঘ স্পেস স্টেশন ধ্বংস করা খুব একটা সহজ নয়। তাই এই কাজ সম্পন্ন করতে অভিনব পন্থা নিচ্ছে নাসা। আইএসএস-কে কক্ষপথচ্যুত করতে একটি মহাকাশযানের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে নাসা। সেই মহাকাশযানের সঙ্গে আইএসএসের সংযোগ স্থাপন করে তাকে কক্ষপথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা নাসার।
নাসা জানিয়েছে, আইএসএসের সঙ্গে মহাকাশযানটি এমন ভাবে জু়ড়তে হবে যেন কক্ষপথচ্যুত হলেও তা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে গিয়ে পড়ে। স্পেসনিউজ় সূত্রে খবর, মহাকাশযান তৈরি করতে খরচ হবে ১০০ কোটি ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। নাসার তরফে জানানো হয়েছে আমেরিকার একটি সংস্থা মহাকাশযান হিসাবে ‘ইউএস ডিঅরবিট ভেহিকল’ (ইউএসডিভি) তৈরি করবে।
বর্তমানে যে ধরনের মহাকাশযান ব্যবহার করা হয় সেগুলির থেকে ইউএসডিভি অনেকটাই আলাদা হবে বলে জানিয়েছে নাসা। কক্ষপথ থেকে চ্যুত হওয়ার সময় ‘ক্রিটিকাল ডিঅরবিট বার্ন’ হয়। সেই ‘বার্ন’ সহ্য করার ক্ষমতা থাকার পাশাপাশি ইউএসডিভিকে প্রথম উড়ানেই সফল হতে হবে। তবে বিশেষ ধরনের ইউএসডিভি আকারে বিশাল হবে বলে নাসার দাবি। তৈরি করার পর নানারকম পরীক্ষানিরীক্ষা করতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে নাসা।
স্পেসরেফ সূত্রে খবর, ইউএসডিভির নির্মাণের জন্য চলতি অর্থবর্ষে প্রাথমিক ভাবে ১৫০০ কোটি টাকার আবেদন জানিয়েছে নাসা। এমনকি হোয়াইট হাউস সেই আবেদনে সবুজ সঙ্কেতও দিয়েছে।