সহজে মিশতে পারা নিঃসন্দেহে একটি গুণ। সবার এই গুণ থাকে না। এটি একদিনে গড়েও ওঠে না। কিছু মানুষ থাকে যারা ছোটবেলা থেকেই চটপটে স্বভাবের হয়। তারা খুব দ্রুত মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।
তবে এ ধরনের মানুষের কিছু অসুবিধাও থাকে। সবার সঙ্গে সহজে মিশে গেলে কিছু বিষয় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই বলে কি কারও সঙ্গে মিশবেন না? অবশ্যই মিশবেন। তবে এই দিকগুলোর প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে-
১. আবেগের প্রাধান্য: যারা মানুষের সঙ্গে সহজে মিশে যায়, তাদের মন অনেক নরম হয়। তারা অন্যদের থেকে বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে থাকে। এ ধরনের মানুষেরা কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। এই আবেগপ্রবণতা তাদের জীবনের ব্যক্তিগত এবং পেশাদার উভয় দিককে প্রভাবিত করতে পারে।
২. প্রতিশ্রুতি রক্ষার চাপ: সহজে মিশতে পারলে বন্ধু হতে সময় লাগে না। তখন অনেক আপনজন তৈরি হয়। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই আপনার প্রতি অনেক মানুষের প্রত্যাশাও তৈরি হবে। দিতে হবে অনেককে অনেক প্রতিশ্রুতি। এরপর সেসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার চাপ অনুভব করবেন। কারণ একজন মানুষ খুব বেশি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না। অনেক জায়গায় যেতে হতে পারে, অনেক সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা লাগতে পারে। এগুলো আপনার কাছে চাপ হিসেবে ধরা দিতে পারে। কারণ সব সময় সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হয় না।
৩. অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা: যারা মানুষের সঙ্গে মিশতে বেশি পছন্দ করে বা সহজে মিশে যায়, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পছন্দ করে। এই নির্ভরশীলতা মানে আর্থিক নির্ভরশীলতা নয়। আসলে তারা মানসিকভাবে অন্যের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে যায়। এই নির্ভরতা তাদের আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করতে পারে।
৪. একা থাকে পারে না: যারা মানুষের মধ্যে থাকতে বা মানুষের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করে, তারা একা থাকা পছন্দ করে না। এটি তাদের কাছে অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু কিছু সময় আছে যখন একা থাকার প্রয়োজন হয়। এমন পরিস্থিতিতে তারা মানিয়ে নিতে পারে না। তখন তারা হতাশ ও ক্লান্ত বোধ করে। নিজের কাজ করার, ক্যারিয়ারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য একা থাকার প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু তাদের অভ্যাস না থাকার কারণে এক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার ভয় থাকে।
৫. অন্যের কথায় মনোযোগ দিতে না পারা: যারা অন্যের সঙ্গে সহজে মিশে যায় তারা অনেক বেশি কথা বলতে পছন্দ করে। যে কারণে কারও সঙ্গে কথা বলার সময় তারা অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে পারে না। কারণ তারা নিজের কথা আগে বলতে চায়। তাদের এই স্বভাবের কারণে অনেকে মনে মনে বিরক্তও হতে পারে। এ ধরনের স্বভাবের ফলে তাদের কমিউনিকেশন স্কিল উন্নত হয় না, যদিও তারা সহজে অন্যের সঙ্গে মিশতে পারে।