গ্যাসের সমস্যায় শুধু বড়দেরই হয় না, ছোটদেরও হয়। তারাও কিন্তু কষ্ট পায়। পেট ভরা থাকলেও নবজাতক শিশুরা কান্না-কাটি করলে বুঝবেন তারা গ্যাসে কষ্ট পাচ্ছে। জন্মের পর বহু নবজাতক শিশুরই পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। তবে শিশুদের গ্যাসের সমস্যা সাধারণত কয়েকদিনে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে অনেক দিন পর্যন্ত চলতে থাকে।
শিশুর পেটে গ্যাস হওয়ার আরো কারণ-
মায়ের দুধ বা ফর্মুলার দুধের মাধ্যমে বাই প্রডাক্ট হিসেবেই শিশুর পেটে গ্যাস চলে যায়। শিশুর পেটে ব্যথা সৃষ্টি করে। আর সমস্যাটা যেহেতু বুঝাতে পারে না, তাই সেসময় অনবরত কান্না করে শিশু। যেসব কারণে শিশুর পেটে গ্যাস জমা হয়-
* শিশু মায়ের স্তনে বা দুধের বোতলে সঠিকভাবে মুখ দিয়ে দুধ পান করতে না পারলে তার পেটে অতিরিক্ত বাতাস ঢুকে পড়ে।
* যদি শিশু প্রচুর কান্না করে, তাহলে তার পেটে আরো গ্যাস ঢুকে পড়ে। আর এভাবে শিশু যতো কান্না করে তার পেটে চক্রাকারে ততো গ্যাস জমা হয়।
* শিশুর মা যেসব খাবার খায়, তাতে গ্যাস উৎপাদনের উপাদান থাকলে তা শিশুর পেটে গ্যাস তৈরি করে।
* অতিরিক্ত দুধ পান করানোর কারণেও শিশুর পেটে গ্যাস জমা হয়।
* এছাড়া হরমোনজনিত সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, কার্বোহাইড্রেট খাওয়া এসব কারণেও শিশুর পেটে গ্যাস হয়।
শিশুদের গ্যাস হলে কী করবেন-
১. বারপিং বা ঢেকুর তোলানোর পদ্ধতি: নবজাতকের পেটে গ্যাস বা বাতাস বের করতে আলতোভাবে পিঠ চাপড়ে ঢেকুর তোলানো জরুরি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘বারপিং’ বলে। শিশুকে এমনভাবে কোলে তুলে ঢেকুর তোলাতে হবে, যেন শিশু ও মা দুজনের জন্যই তা আরামদায়ক হয়।
এ ক্ষেত্রে সোজা হয়ে বসে বাচ্চাকে বুকের বিপরীতে এমনভাবে নিতে হবে, যেন বাচ্চার থুতনি মায়ের কাঁধের ওপর থাকে; এক হাত দিয়ে মা বাচ্চাকে সাপোর্ট দেবেন এবং অন্য হাত কাপের মতো আকৃতি করে পিঠে আলতোভাবে চাপ দেবেন।
২. পেটে মালিশ: ঘড়ির কাঁটা যে ভাবে ঘোরে সেই দিক দিয়ে এই মালিশ শুরু করতে হবে। ডান হাতের সাহায্যে বাঁ থেকে ডান দিকে অর্ধবৃত্তাকারে মালিশ করুন। তার পর বাঁ হাত দিয়ে মালিশ করে এই বৃত্ত সম্পূর্ণ করুন। খুব জোর দিয়ে এই মালিশ করবেন না। সব সময় হাল্কা হাতে মালিশ করা উচিত।
৩. হাঁটু ওপরে করুন: বাচ্চাকে সোজা শুইয়ে দিন। তার পর হাঁটুর কাছ থেকে পা ধরে পেটের দিকে মুড়ে দিন। দুই পা এক সঙ্গে পেটের কাছে নিয়ে যাবেন। তার পর ৫ সেকেন্ড এ ভাবেই থাকতে দিন। তিন বার এই প্রক্রিয়া করুন। এর ফলে বাচ্চাদের পেটে জমে থাকা গ্যাস সহজে বেরিয়ে যাবে।
৪. বাইসাইকেল চিকিৎসা: এরপরও যদি মনে হয় শিশুর পেটে গ্যাস জমে আছে, সে ক্ষেত্রে শিশুকে চিত করে শুইয়ে পেটে আলতো করে চাপ দিতে হবে এবং সাইকেলের প্যাডেল ঘোরানোর মতো করে বাচ্চার পা নড়াচড়া করানোর চেষ্টা করতে হবে। এর ফলে শিশুর পেটে জমে থাকা অতিরিক্ত গ্যাস বের হয়ে যাবে।