আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ইসলামের পবিত্র রমজান মাস। অনেকেই এ মাসে চিন্তিত থাকেন যে এই মাসে কীভাবে শরীরের পুষ্টির সাথে প্রতিদিনের ব্যায়ামের ভারসাম্য রাখবেন।
তবে বেশিরভাগই চান যে রোজা রেখে স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি শারীরিক ফিটনেস ধরে রাখতে। আর তাই রোজার সময় সারাদিন না খেয়ে থেকে শরীর ও স্বাস্থ্য ফিট রাখতে চাইলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত পানি পান: অনেক মানুষই অভিযোগ করেন যে রোজার প্রথম কয়েকদিন তারা মাথা ব্যাথায় ভোগেন। এটি সাধারণত পানিশূণ্যতার কারণে হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আর তাই সারাদিনে যে পরিমাণ পানি পান করা হয় রোজার মাসে সেই পরিমাণ পানি ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পান করা উচিত। এছাড়া, কেউ যদি ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় খেয়ে অভ্যস্ত থাকেন, তাহলেও রোজার প্রথম কয়েকদিন মাথা ব্যাথা হতে পারে। কারণ ক্যাফেইনের অভ্যাস থাকা ব্যক্তিদের শরীরে ক্যাফেইনের ঘাটতি হলে মাথা ব্যাথা তৈরি হয়।
ইফতারে অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া: যেহেতু রোজার সময় আমরা সারাদিন না খেয়ে থাকি, ইফতারের সময় আমাদের অনেকেরই মনে হতে পারে যে সারাদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে অনেক খেতে হবে। অনেকের মধ্যেই এই প্রবণতা কাজ করে। ইফতারে অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার শরীরকে স্বাভাবিকের চেয়ে দুর্বল করে দেয়। পুষ্টিবিদদের মতে পানি দিয়ে ইফতার শুরু করে এরপর খেজুর ও ফল খাওয়া ভালো। ইফতারে প্রোটিন, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ও সবজি রাখা উচিত।
দিনের প্রথম খাবার পুষ্টিকর: রোজার মাসে দিনে যেহেতু তিনবারের বদলে দুইবার খাবার গ্রহণ করা হয় সাধারণত, সেই ক্ষেত্রে ঐ দুই বেলার খাবার যেন আপনাকে সারাদিনের চালিকাশক্তি দিতে পারে তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করতে হবে। ভোররাতের খাবারে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবারের পাশাপাশি কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা-জাতীয় খাবার থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে রোজার সময় কোনভাবেই সেহরি বাদ দেওয়া যাবে না। অন্যথায় শরীরে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হয়।
ব্যায়ামের সময় নির্ধারন করা: অধিকাংশ মানুষই ইফতারের এক বা দুই ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন কারণ সেক্ষেত্রে ব্যায়াম শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা খাবার ও পানি পেতে পারে। তবে যার যার নিজস্ব সূচী অনুযায়ী হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। শুরুর পর প্রথম ব্যায়াম কিছুটা কঠিন মনে হলেও আমাদের শরীর খুব দ্রুত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে পারে। তবে রোজার সময় ব্যায়ামের তীব্রতা কমিয়ে ফেলা হালকা ব্যায়ামের দিকে জোর দেওয়া উচিত।
খাওয়ার ভারসাম্য বজায় রাখুন: আপনি যদি কোনো দাওয়াতে বা পরিবারের সদস্যদের সাথে খেতে বসেন, তাহলে সব আইটেম খাওয়ার একটা চাপ অনেক সময় থেকে থাকে। তবে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি নিজের খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। খাওয়ার সময় ধীরে খাওয়া শেষ করুন। সময় নিন, আশেপাশের মানুষের সাথে কথা বলুন।
শক্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে মনোযোগ দিন: দিনের যেই সময়েই আপনি ব্যায়াম করেন না কেন, আপনার কার্যক্রমের সাথে মানিয়ে নেয়াটা জরুরি। হাফিজ বলেন, “রোজার সময় ব্যায়ামের তীব্রতা কমিয়ে ফেলুন। এই মাসে আপনার শরীরের শক্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি, নাড়াচাড়া ও গতিশীলতা বাড়ানোর দিকে নজর দিন। শারীরিকভাবে আগের চেয়ে কার্যকর হওয়ার পেছনে মনোযোগ দিন।”