আবাসন মেলার দ্বিতীয় দিনই বেড়েছে দর্শনার্থী, চলছে ছাড়

রেযা খান

আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার ২০২২’ শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার (২১ডিসেম্বর) থেকে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া আবাসন মেলার দ্বিতীয় দিন চলছে আজ বৃহস্পতিবার।

মেলার দ্বিতীয় দিনেই চোখে পড়ার মত ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থী। পাঁচ দিনব্যাপী রিহ্যাব ফেয়ারে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানগুলোও নিয়ে এসেছে বিভিন্ন অফার আর মূল্যছাড় নিয়ে। আগত ক্রেতা-দর্শনার্তীর অনেকেই ফ্ল্যাট বা প্লটে বুকিং দিচ্চেন। অনেকেই আবার দেখতে এসেছেন পছন্দের প্রকল্প। মেলা চলাকালীন আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন প্লট অ্যাপার্টমেন্ট বা প্লাটি বুকিং দিলেই পাচ্ছেন বিশেষ ছাড়। কোম্পানি ভেদে বিভিন্ন বিভিন্ন ছাড় দিচ্ছেন। অনেক কোম্পানি আবার বুকিং এর সাথে দিচ্ছেন উপহার সামগ্রী। যেটা লুফে নিচ্ছেন আগতরা।

মেলায় এসেছেন মোহাম্মদপুর থেকে রিতা আহমেদ। তিনি বলেন, আমি ধানমন্ডি কিংবা মোহাম্মদপুরে একটি ফ্লাট কিনতে চাই। এর আগে বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করেছিলাম কিন্তু পছন্দ মত পাইনি। বেড়াতে এসেছি কারণ মেলাতে একই ছাদের নিচে অনেকগুলো কোম্পানিকে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন ছাড় দেওয়া হয়। আমি কয়েকটা কোম্পানি দেখেছি এখনও দেখছি পছন্দ হলে বুকিং দিব।

শরীফ আহমেদ এসেছেন পুরান ঢাকা থেকে। তিনি বলেন, রাজধানীর উত্তরার দিকে একটি ফ্লাট কিনতে চাই। অনেক কোম্পানির প্রকল্পগুলো দেখেছি পছন্দ হয়েছে, আবার হয়নি, আমি আরো কিছুটা ঘুরে তারপর বুকিং দিতে চাই। কারণ এখানে বুকিং দিলেই ছাড় পাওয়া যাই সাথে উপহার সামগ্রী আছে। তাছাড়া বাড়তি ঝামেলা নাই কারণ সব কোম্পানিগুলোই রিহ্যাব সদস্য।

এদিকে ক্রেতা টানতে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ছাড় অফার দিচ্ছেন। কেউ কেউ উপহার সামগ্রীর পাশাপাশি দিচ্ছেন উমরা করার সুযোগ। মেলায় প্রাণ-ইআরএফএল কিচেন আইটেম এবং ফিটিংস আইটেমে ১০ থেকে ২০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।

সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রায়হান আলী জানান, মেলা উপলক্ষে আমাদের এখানে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। যে কোনো ক্রেতা এখান থেকে বুকিং দিলেই দশ থেকে বিশ শতাংশ ছাড় পাবেন তিনি।

মেলায় সেবা হোল্ডিং দশ শতাংশ ছাড়ের পাশাপাশি বুকিং দিলেই রয়েছে ওমরার সুযোগ। দলটির বিক্রেতারা জানান, তাদের বিভিন্ন প্রকল্পে এ ধরনের সুযোগ রয়েছে। তবে এ সুযোগ শুধুমাত্র চলতি মাসের জন্যই প্রযোজ্য হবে বলে জানান তারা।

গ্রীনল্যান্ড মডেল টাউন নিয়ে এসেছে বিশেষ ছাড়। মেলা উপলক্ষে বুকিং দিলেই ওয়াশিং মেশিন ফ্রি। তাদেরও এ সুযোগ রয়েছে শুধুমাত্র মেলা কেন্দ্রিক, মেলার পরে আর এই সুযোগ থাকবে না। মেলা আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সোহেল রানা জানান, ২০০১ সাল থেকে ঢাকায় রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার শুরু হয়। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪ টি ফেয়ার সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। রিহ্যাব ২০০৪ সাল থেকে বিদেশে হাউজিং ফেয়ার আয়োজন করে আসছে। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১২ টি, যুক্তরাজ্যে, দুবাই, ইতালীর রোম, কানাডা, সিডনী, কাতারে ১টি করে এবং দুবাইতে ২টি “রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার” সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই সকল ফেয়ার আয়োজনের মাধ্যমে রিহ্যাব দেশে ও বিদেশে গৃহায়ন শিল্পের বাজার সৃষ্টি এবং তা প্রসারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে।

মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ বলেন, প্রবাসী ক্রেতারা যেমন দেশে তাদের পছন্দের আবাসন খুঁজে পেয়েছে  আবার এই ফেয়ারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি গৃহায়ন শিল্প এবং লিংকেজ শিল্প বিকাশে অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে এ মেলা। এবারের ফেয়ারে ১৮০টি স্টল থাকছে। এই ফেয়ারে আমরা ৩টি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, ৭টি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৬ টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩ অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিতে পেরেছি।

মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ বলেন, অবকাঠামোগত সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের সাথে বড় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে রিহ্যাব। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাসের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তিন দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছে রিহ্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো। আমাদের উদ্যোগের কারণে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের স্বপ্ন সফল হয়েছে। আমাদের রিহ্যাব সদস্যদের কারণেই ঢাকার বাহিরের অনেক লোক জমির মালিক হয়েছেন এবং প্রায় ৩ লাখ পরিবার নিজ ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। আবাসনের মালিকানা সৃষ্টি নাগরিকদের মনে আত্মনির্ভরতা সৃষ্টি করেছে। শহরের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করেছে। ঢাকায় অনেকগুলো নাগরিকদের নিজ ফ্ল্যাটের মালিকানা বাসা ভাড়ার ক্ষেত্রে অনেকটা স্থিতিশীলতা তৈরি করেছে। রিহ্যাব সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই আজ শহরগুলোতে সুন্দর সুন্দর নান্দনিক ভবন তৈরি হচ্ছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button